কলকাতা বস্ত্রশিল্প

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর, কলকাতার অর্থনীতিতে বস্ত্র শিল্পের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।[১] এছাড়াও এই শিল্প শহরের শিল্পের উৎপাদন, রপ্তানি ও কর্মসংস্থানের খাতেও অনেক অবদান রয়েছে। শহরের বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র শিল্পগুলির মধ্যে পাট শিল্প কলকাতাকে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে প্রাধান্য সৃষ্টিতে সাহায্য করেছে। ২০০৮ সালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কলকাতা বস্ত্র শিল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল:

  • কলকাতার উপর ভিত্তি করে ৩৩ শতাংশ বস্ত্র সংস্থাগুলি ব্র্যান্ডেড পণ্যগুলির নির্মাণ ও বিক্রয় করে।
  • ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে, কলকাতার বস্ত্র শিল্প গড়ে ২৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • বস্ত্র শিল্প সদ্ব্যব্যবহারের গড় সামর্থ্যের ৯০ শতাংশের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়।

কলকাতার সবচেয়ে পছন্দের বস্ত্র পরিষেবা হল পোশাক।

  • কমপক্ষে দুটি উৎপাদনের সুবিধাসহ শহরের বস্ত্র শিল্পের ২৩ শতাংশ তাদের পরিচালনায় বহন করা হত।

কলকাতার মোট বস্ত্র শিল্পের ৩৮ শতাংশ হল ১৯৯০ সালের পুরনো। ২০০০ সালের পর মাত্র ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই বস্ত্র সংস্থাগুলির ৬৫ শতাংশ রপ্তানি সেবার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। তাদের প্রায় ৪০ শতাংশ এই রপ্তানি সেবা থেকে মোট আয়ের সিংহ ভাগ উদ্ভূত করেছে। কলকাতার বস্ত্র শিল্পের বৃদ্ধির পিছনে প্রধান কারণ ভারতের অন্যান্য মহানগরী শহরগুলির তুলনায় ব্যবসা পরিচালনায় কলকাতায় খরচ কম। এগুলি ছাড়াও এখানকার অপরিমিত প্রাকৃতিক সম্পদ ও উপযুক্ত আবহাওয়ার জন্য এই শহরের বস্ত্রশিল্পের উত্থান সাবলীল ভাবে উপলব্ধ হয়েছে। কলকাতা বস্ত্রশিল্পের প্রধান পণ্য তাঁত ও কুটির শিল্প প্রধানত কলকাতা বস্ত্র শিল্পকে গঠন করেছে। এই বস্ত্রশিল্পের একটি প্রধান পণ্য-দ্রব্য হল পাট-বস্ত্র, আর এর বকেয়া কারণ হল রাজ্যটি পাট উৎপাদনে সমৃদ্ধ। কলকাতার অন্যান্য বস্ত্রশিল্পের মধ্যে রয়েছে তুলো এবং রেশম দ্রব্য।

  1. কলকাতার তাঁত শিল্প- অন্যান্য হস্তশিল্পের ন্যায়, কলকাতার তাঁত বিভাগও শহরের শিল্পের উন্নয়নে একটি বিশাল অবদান রেখেছে।
  2. কলকাতার পাট শিল্প- ‘স্বর্ণ তন্তু’- নামে পরিচিত পাট হল এখানকার সস্তায় উপলব্ধ তন্তু। এটি বিভিন্ন পাটজাত দ্রব্যের উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় যেমন বস্তা, ব্যাগ, পার্স, বোতল ব্যাগ, অলংকার, মেঝেতে পাতার কার্পেট, উন্নত মানের উপহার ও আনুষঙ্গিক দ্রব্য যা বস্ত্রশিল্পের এক বিশাল অংশ দখল করে আছে। কলকাতায় অবস্থিত বেশ কিছু বিখ্যাত পাট শিল্পগুলি হলঃ ইন্ডিয়্যান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ রিসার্চ আ্যসোসিয়েশন, আনন্দ জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, ডানলপ জুট হাউস, এস.কে.জি জুট ইন্ডাস্ট্রিজ।
  3. কলকাতার সূতিশিল্প- সূতিশিল্প, কলকাতার বস্ত্রশিল্পে এর এক অবদান ছাড়াও, এটি শহরের দক্ষ কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এখনও অনেক মানুষ সূতির ব্যবসায় নিযুক্ত রয়েছে। কলকাতায় সূতির বজারে জনপ্রিয় বিভিন্ন সূতির পণ্য উপলব্ধ হয়, যেমন জামাকাপড়, সুতা, কাপড় এবং পোশাক।
  4. কলকাতার রেশমশিল্প- রেশম শিল্প, তার ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এটি কলকাতার এক উদীয়মান শিল্প রূপে গড়ে উঠেছে। এই শহরে অবস্থিত দুটি বিখ্যাত রেশম শিল্প হলঃ
  • ইস্টার্ন সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড
  • সাফিয়া সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ।

বস্ত্র শিল্পের সুবিধা[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহরে বস্ত্র শিল্পের নানাবিধ উপকারিতা রয়েছে। সেগুলির মধ্যে কিছু হল নিম্নরূপঃ

  • একটি আত্মনির্ভরশীল ও স্বাধীন শিল্প।
  • ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর সম্ভাবনা প্রচুর।
  • প্রাকৃতিক সম্পদের জায়গার সঙ্গে এর অদূরবর্তিতা।
  • দক্ষ ও প্রতিযোগী কর্মশক্তি
  • হুগলী নদীর নাব্যতা
  • সহজ রপ্তানির সম্ভাবনা

বস্ত্র শিল্পের অসুবিধা[সম্পাদনা]

বেশ কিছু সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, কলকাতার বস্ত্র শিল্পের নিম্নলিখিত কিছু অসুবিধাও রয়েছে:

  • অত্যন্ত খন্ডিত শিল্পক্ষেত্র
  • পাটের উৎপাদনের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল
  • বিক্রির খারাপ অবস্থা
  • বাজার ধরার সম্ভাবনার অভাব
  • বিভিন্ন কলকাতা বস্ত্র শিল্পের বিশদ তথ্য
  • কলকাতার মহানগরী শহরে বেশ কিছু বিভিন্ন প্রকৃতির বস্ত্রশিল্প উৎপাদন ও বণ্টনের সংস্থা রয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাংলার বস্ত্রশিল্পের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য"আনন্দবাজার প্রত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-২০-১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)