গড় দ্রুতি উপপাদ্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুষম ত্বরণের মেট্রন নিয়ম তথা গড় দ্রুতি উপপাদ্যটির জন্য অরেসমের দেওয়া জ্যামিতিক প্রমাণ।
এই চিত্রের মাধ্যমে গ্যালিলিও সুষমভাবে পরিবর্তিত গতির জন্য আড়কাঠি ক্ষেত্রের সূত্রটি কেমন হবে তা দেখিয়েছেন। এটি কয়েক শতাব্দী পূর্বে পূর্বতন ওরেসমে যে জ্যামিতিক সমাধানটি দিয়েছিলেন তারই অনুরূপ।

গড় দ্রুতি উপপাদ্য বস্তুর ত্বরণের সাথে সম্পর্কযুক্ত একটি বিশেষ সূত্র যার আবিষ্কার ঘটে ১৪শ শতকের মেট্রন কলেজের একদল চিন্তাবিদদের মাধ্যমে। এসব চিন্তাবিদ অদ্ভুত কিন্তু আকর্ষণীয় উপায়ে দার্শনিক সমস্যাবলীর যৌক্তিক ও গাণিতিক সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন, এসব চিন্তাবিদকে একত্রে অক্সফোর্ড ক্যালকুলেটর বলা হত। এই উপপাদ্যটি সুষম ত্বরণের মেট্রন নিয়ম নামেও পরিচিত।[১] নিকোল ওরেসমে উপপাদ্যটির একটি প্রমাণ দেন। এই উপপাদ্য অনুসারে, সুষমভাবে ত্বরিত (স্থির অবস্থান বা শূন্য আদি দ্রুতি নিয়ে যাত্রাকারী) বস্তুর দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব হবে ত্বরিত বস্তুটির শেষ দ্রুতির অর্ধেকের সমান সুষম দ্রুতিতে গতিশীল কোন বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান।[২]

ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]

সাধারণিকৃত মেট্রন নিয়মটি প্রমাণের জন্য ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের অনুরূপে অরেসমে যে জ্যামিতিক সূত্রটি প্রদান করেন সেটাকে আজকের দিনে সূত্রটির আকারে প্রকাশ করা যায়। অর্থাৎ অতিক্রান্ত দূরত্ব আদি বেগ ও শেষ বেগের সমষ্টির সাথে ব্যায়িত সময়ের গুণফলের অর্ধেকের সমান।[৩] (৩৫০–৫০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে) ব্যাবিলনীয় সভ্যতার লোকেরা জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত কাজে যেসব মৃত্তিকা ফলক ব্যবহার করতেন সেগুলো বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান ও গতি গণনার এই ট্রাপিজিয়াম পদ্ধতিটিরই কথা বলে। উপরন্তু এই ফলকগুলো থেকে ১৪শ শতকের এই উপপাদ্যটিরও পূর্বানুমান পাওয়া যায়।[৪]

গ্যালিলিও যাকে পড়ন্ত বস্তুর গতির সমীকরণগুলোর কৃতিত্ব দেওয়া হয় তারও বহু পূর্বেই মধ্যযুগের বিজ্ঞানীরা পড়ন্ত বস্তুর গতির সমীকরণগুলোর ভিত্তি এই গড় দ্রুতি উপপাদ্যটি প্রতিপাদন করে করেছিলেন। এছাড়াও ভৌত সমস্যাকে চিত্রের মাধ্যমে গাণিতিক ফাংশনরূপে উপস্থাপনের যেসব বিবরণের কথা জানা যায় অরেসমের এই প্রমাণটি হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে প্রথম একটি উদাহরণ, অধিকন্তু এটি সমাকলনের যে প্রাচীন রূপ তারও প্রথম উদাহরণ যা ক্যালকুলাসের ভিত্তির সূচনা করেছে। গাণিতিক পদার্থবিদ ও বিজ্ঞানের ইতিহাসবিদ ক্লিফোর্ড ট্রুয়েসডেল লিখেছেন:[৫]

The now published sources prove to us, beyond contention, that the main kinematical properties of uniformly accelerated motions, still attributed to Galileo by the physics texts, were discovered and proved by scholars of Merton college.... In principle, the qualities of Greek physics were replaced, at least for motions, by the numerical quantities that have ruled Western science ever since. The work was quickly diffused into France, Italy, and other parts of Europe. Almost immediately, Giovanni di Casale and Nicole Oresme found how to represent the results by geometrical graphs, introducing the connection between geometry and the physical world that became a second characteristic habit of Western thought ...

এই উপপাদ্যটি সুষম ত্বরণের সিস্টেমের জন্য অতি সাধারণ সৃতিবিদ্যার সমীকরণের একটি বিশেষ ক্ষেত্র।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Edward Grant A Source Book in Medieval Science (1974) Vol. 1, p. 252.
  2. Boyer, Carl B. (১৯৫৯)। "III. Medieval Contributions"A History of the Calculus and Its Conceptual Development। Dover। পৃষ্ঠা 79–89। আইএসবিএন 978-0-486-60509-8 
  3. C. H. Edwards, Jr., The Historical Development of the Calculus (1979) pp. 88-89.
  4. Ossendrijver, Mathieu (২৯ জানু ২০১৬)। "Ancient Babylonian astronomers calculated Jupiter's position from the area under a time-velocity graph"। Science351 (6272): 482–484। এসটুসিআইডি 206644971ডিওআই:10.1126/science.aad8085পিএমআইডি 26823423বিবকোড:2016Sci...351..482O 
  5. Clifford Truesdell, Essays in The History of Mechanics, (Springer-Verlag, New York, 1968), p. 30

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Sylla, Edith (1982) "The Oxford Calculators", in Kretzmann, Kenny & Pinborg (edd.), The Cambridge History of Later Medieval Philosophy.
  • Longeway, John (2003) "William Heytesbury", in The Stanford Encyclopedia of Philosophy.