গোণ্ডি ভাষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গোণ্ডি
কোয়তোর
দেশোদ্ভবভারত
জাতি১৩,২৫৬,৯২৮ গোণ্ড জাতি
মাতৃভাষী
২,৭১৩,৭৯০, জাতিগত জনসংখ্যার ২০% (২০০১ জনগণনা)[১]
দ্রাবিড়ীয়
  • দক্ষিণ-মধ্য
    • গোণ্ডি–কুই
      • গোণ্ডি ভাষাসমূহ
        • গোণ্ডি
গুঞ্জালা গোণ্ডি লিপি
গোণ্ডি লিপি
দেবনাগরী, তেলুগু লিপি (যৌথভাবে ব্যবহার কারা হয়)
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-২gon
আইএসও ৬৩৯-৩gonসমেত কোড
পৃথক কোডসমূহ:
gno – উত্তরাঞ্চলীয় গোণ্ডি
esg – আহেরি গোণ্ডি
wsg – আদিলাবাদি গোণ্ডি
গ্লোটোলগsout2711  (দক্ষিণাঞ্চলীয় গোণ্ডি)[২]
nort2702  (উত্তরাঞ্চলীয় গোণ্ডি)[৩]

গোণ্ডি (আ-ধ্ব-ব: Gōndi) একটি দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলীয় দ্রাবিড়ীয় ভাষা, এটি মূলত মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ তথা উক্ত রাজ্যগুলোর পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চলের গোণ্ড জাতির প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষের মাতৃভাষা।[৪] এটি গোণ্ড জাতির ভাষা হলেও বর্তমানে এক-পঞ্চমাংশ গোণ্ডই এই ভাষা বলতে পারে, যা বিলুপ্তির পথে ঝুঁকিপূর্ণ। গোণ্ডি ভাষার সমৃদ্ধ লোক সাহিত্য রয়েছে, যার উদাহরণস্বরূপ বিয়ের সঙ্গীত ও কাহন উল্লেখ্য।

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

গোণ্ডি ভাষায় দুটি লিঙ্গ পদ্ধতি প্রচলিত, সাধারণত বিশেষ্যগুলো পুংলিঙ্গ অথবা অ-পুংলিঙ্গ হয়ে থাকে। গোণ্ডি ভাষা প্রাথমিকভাবে স্পর্শ ব্যাঞ্জন (গ্, জ্, , ড্, ব্) ও মহাপ্রাণ ব্যাঞ্জন (ঘ্, ঝ্, ঠ্, ধ্, ভ্) বিকাশের মাধ্যমে আদি-দ্রাবিড় ভাষা থেকে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র ভাষার রূপ ধারণ।

উপভাষাসমূহ[সম্পাদনা]

গোণ্ডির অধিকাংশ উপভাষা এখনও পর্যাপ্তভাবে নথিভুক্ত তথা বর্ণনা করা হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ উপভাষাগুলো হলো ডোরলা, কোয়া, মদিয়া, মুরিয়া ও রাজ গোণ্ড। কিছু মৌলিক ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য দক্ষিণ-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপভাষাগুলোকে পৃথক করে। একটি মূল আচরণের প্রাথমিক "স", যা উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় উপভাষায় লক্ষ্য করা যায়, যেখানে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় উপভাষায় তা পরিবর্তিত হয়ে "হ" উচ্চারিত হয়; অন্য কিছু উপভাষায় এটি সম্পূর্ণ লুপ্ত। গোণ্ডি ভাষায় অন্যান্য দ্বান্দ্বিক বৈচিত্র্যে যেমন, প্রাথমিক "র" থেকে প্রাথমিক "ল"-এ রূপান্তর এবং "ই" ও "ও" থেকে "আ"-এ রূপান্তর।

লেখন পদ্ধতি[সম্পাদনা]

গোণ্ডির লেখন পদ্ধতি দুভাগে বিভক্ত যথা: সহজাত লিপির ব্যবহার এবং অ-সহজাত লিপির ব্যবহার।

ঐতিহ্যগতভাবে, কোনও বহুবিস্তৃত সহজাত লিপির অভাবে, গোণ্ডি ভাষা দেবনাগরীতেলুগু লিপিতে লেখা হয়।

গোণ্ডির জন্য একটি সহজাত লিপি উদ্ভাবনে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে, মুন্সি মঙ্গল সিং মাসারাম ব্রাহ্মী অক্ষরগুলির উপর ভিত্তি করে এবং ভারতীয় বর্ণমালার অনুরূপ বিন্যাসে একটি সহজাত লিপি তৈরি করেন। [৫] যাইহোক, এই লিপিটি ব্যবহারিক ব্যাপকতা লাভ করেনি, এবং গোণ্ড জাতির অধিকাংশ লোক অশিক্ষিতই থেকে যায়।

ভারতীয় প্রাচ্য পাণ্ডুলিপি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র, মহারাষ্ট্র অনুযায়ী, ঐ লিপিতে ডজন খানিক পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে। এই লিপি সম্পর্কে গোণ্ডি জাতির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচার অভিযান ও লিপির উন্নয়নমূলক কাজ চলছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "UNESCO Atlas of the World's Languages in danger"www.unesco.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৮ 
  2. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "দক্ষিণাঞ্চলীয় গোণ্ডি"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  3. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "উত্তরাঞ্চলীয় গোণ্ডি"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  4. Beine, David K. 1994. A Sociolinguistic Survey of the Gondi-speaking Communities of Central India. M.A. thesis. San Diego State University. chpt. 1
  5. "Preliminary Proposal to Encode the Gondi Script in the UCS" (পিডিএফ)। ২৩ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৮ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Beine, David K. 1994. A Sociolinguistic Survey of the Gondi-speaking Communities of Central India. M.A. thesis. San Diego State University. 516 p.
  • Chenevix Trench, Charles. Grammar of Gondi: As Spoken in the Betul District, Central Provinces, India; with Vocabulary, Folk-Tales, Stories and Songs of the Gonds / Volume 1 - Grammar. Madras: Government Press, 1919.
  • Hivale, Shamrao, and Verrier Elwin. Songs of the Forest; The Folk Poetry of the Gonds. London: G. Allen & Unwin, ltd, 1935.
  • Moss, Clement F. An Introduction to the Grammar of the Gondi Language. [Jubbalpore?]: Literature Committee of the Evangelical National Missionary Society of Sweden, 1950.
  • Pagdi, Setumadhava Rao. A Grammar of the Gondi Language. [Hyderabad-Dn: s.n, 1954.
  • Subrahmanyam, P. S. Descriptive Grammar of Gondi Annamalainagar: Annamalai University, 1968.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]