গোলাপী এখন ট্রেনে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গোলাপী এখন ট্রেনে
চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকআমজাদ হোসেন
প্রযোজকআমজাদ হোসেন
শ্রেষ্ঠাংশে
চিত্রগ্রাহকরফিকুল বারী চৌধুরী
সম্পাদকএনামুল হক
প্রযোজনা
কোম্পানি
শুক্লা ফিল্মস
মুক্তি১৯৭৮; ৪৬ বছর আগে (1978)
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

গোলাপী এখন ট্রেনে ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেছেন আমজাদ হোসেন। এ ছবিতে অভিনয় করেছেন ববিতা, ফারুক, আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ, আনোয়ারা, রওশন জামিল, এটিএম শামসুজ্জামান প্রমুখ। মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভালে এই ছবির প্রদর্শনী হয়। সেসময় ছবিটি দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন মৃণাল সেনের মতো নির্মাতারা[১]

চলচ্চিত্রটি ১৯৭৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে মুক্তি পায়। এটি ৪র্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ ১১টি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। পরবর্তী কালে আমজাদ হোসেন এই ছবির দুটি অনুবর্তী পর্ব গোলাপী এখন ঢাকায় (১৯৯৫) ও গোলাপী এখন বিলাতে (২০১০) এবং একটি ডকুফিকশন গোলাপীরা এখন কোথায়? নির্মাণ করেন।[২]

কাহিনি সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

গাঁয়ের প্রভাবশালী ব্যক্তি মণ্ডল। তাঁর ছেলে মিলন পছন্দ করে দরিদ্র গায়েনের মেয়ে গোলাপীকে। একদিন মণ্ডলই গোলাপীর বিয়ের জন্য খোঁজ দেয় এক পাত্রের। কিন্তু বিয়েতে সাইকেল দিতে হবে। নিজের মনকে বশ করে গোপনে সাইকেলের টাকাটা দেয় মিলন। তবে শেষ পর্যন্ত ভেঙে যায় বিয়েটা। এ কারণে আত্মহত্যা করে গোলাপীর বাবা। দারুণ অভাবের মধ্যে পড়ে সংসার। এর হাল ধরতেই ট্রেনে চড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ করে গোলাপী। গাঁয়ের মোড়লরা ভালো চোখে দেখে না গোলাপীর এ কাজ। যারা ট্রেনে কাজ করে গ্রাম থেকে তাদের বের করে দেওয়ার জন্য সালিস বসে।

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

সঙ্গীত[সম্পাদনা]

আমজাদ হোসেনের লেখা অধিকাংশ গানের সুরকার হলেন আলাউদ্দিন আলী আর শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমীন। মূলত আমজাদ হোসেনের গান সৃষ্টিতে এই কয়েকজন মিলে একত্রে কাজ করতেন।[৩] এই ছায়াছবিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে গীতিকার হিসেবে গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রফিকুজ্জামান ছিলেন। এই ছবির সংগীত পরিচালনা করেন আলাউদ্দিন আলী[৪] গীতিকার সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন কণ্ঠ দেন সব গানে। এই ছবির গান গুলি হচ্ছে-

গানের তালিকা
নং.শিরোনামকণ্ঠশিল্পী(গণ)দৈর্ঘ্য
১."আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার"সৈয়দ আব্দুল হাদী৪:২৫
২."ওরে তোর মা জননী, আমার গলার খঞ্জনী"সৈয়দ আব্দুল হাদীসাবিনা ইয়াসমিন৩:২১
৩."উত্তরের গাঁও"  
৪."এতো সস্তায় আসমানীরে পাওয়া যাবে না"  
৫."হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ"সাবিনা ইয়াসমিন২:৫৫

পুরস্কার[সম্পাদনা]

এই চলচ্চিত্রটি ৪র্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া এই চলচ্চিত্রের কলা-কুশলীবৃন্দও বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।[৫]

পুরস্কারের নাম বিভাগ মনোনীত ফলাফল
৪র্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র গোলাপী এখন ট্রেনে বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক আমজাদ হোসেন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা আমজাদ হোসেন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা আনোয়ার হোসেন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী আনোয়ারা বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ গীতিকার আমজাদ হোসেন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ গায়ক সৈয়দ আব্দুল হাদী বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার আমজাদ হোসেন বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক (রঙ্গিন) রফিকুল বারী চৌধুরী বিজয়ী

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সেইসব উজ্জ্বল দিনের স্মৃতি মনে পড়ছে খুব: ববিতা"চ্যানেল আই অনলাইন। ২০১৮-১১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৬ 
  2. তুষার, চিন্তামন (৭ আগস্ট ২০১৩)। "গোলাপীরা এখন কোথায়?"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৯ 
  3. "আমজাদ হোসেন: একজন অসাধারণ গীতিকার"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৬ 
  4. "গোলাপী এখন ট্রেনে"। ১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১৪ 
  5. "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নামের তালিকা (১৯৭৫-২০১২)"fdc.gov.bdবাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]