পৌণ্ড্রক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পৌণ্ড্রক বাসুদেব
ভাগবত পুরাণ এর চরিত্র
অন্তর্ভুক্তিকাশীরাজ,[১] পুণ্ড্ররাজ, শৃগাল বাসুদেব কৃষ্ণ
অস্ত্রবিষ্ণুর নকল চক্র, নকল গদা, নকল শঙ্খ
পরিবারবসুদেব (পিতা), সুতনা (মাতা)

পৌণ্ড্রক বাসুদেব ভাগবত পুরাণে বর্ণিত একজন রাজা। ভাগবত মতে, তিনি পুন্ড্র রাজ্যের রাজা ছিলেন। কিছু সূত্র জানায় যে, তিনি মগধের রাজা জরাসন্ধ এবং গান্ধার রাজ্যের রাজা শকুনি উভয়েরই মিত্র ছিলেন। তিনি কৃষ্ণের প্রধান শত্রু ছিলেন। তিনি নিজেকে বাসুদেব বা ঈশ্বর বলে বিশ্বাস করে কৃষ্ণকে অনুকরণ করেছিলেন। পরে তিনি যুদ্ধে কৃষ্ণের হাতে নিহত হন। কিছু শাস্ত্র অনুসারে, পৌন্ড্রক ছিলেন কৃষ্ণের অবিকল প্রতিরূপ। কিছু শাস্ত্র অনুসারে, তাঁকে দানব রাজ বেণের অবতার বলে মনে করা হয়।

নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে ঘোষণা[সম্পাদনা]

ভাগবত পুরাণের কিছু সংস্করণে বলা হয়েছে যে, তিনি ছিলেন বসুদেবের (শ্রীকৃষ্ণের পিতা বসুদেব নন) এবং কাশীর রাজকুমারী সুতনুর পুত্র। বসুদেবপুত্র হিসেবে তাঁর নামও রাখা হয়েছিল বাসুদেব। পরিণত বয়সে তিনি কাশীর রাজা হন, কারণ তাঁর পিতামহ পুত্রহীন ছিলেন। কংসের কারাগারে[২] বসুদেব বন্দী থাকায় , পৌণ্ড্রক শৈশবকালে পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হন।[৩] তিনি তার বন্ধুদের কথা অতিমাত্রায় বিশ্বাস করেছিলেন, যারা বলেছিল- পৌন্ড্রক তুমি ঈশ্বর। শ্রীমদ্ ভাগবতের দশম স্কন্দের ৬৫তম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে- দ্বারকায় বলরামের অনুপস্থিতির সময়, পৌন্ড্রক শ্রীকৃষ্ণকে একটি বার্তা পাঠান, গরুড়ধ্বজ সহ সমস্ত অস্ত্র-শস্ত্র যা শ্রীকৃষ্ণ ব্যবহার করতেন তা পৌণ্ড্রকের। তিনি আরো ঘোষণা করেন যে- তিনি(পৌণ্ড্রক)ই প্রকৃত বাসুদেব (ঈশ্বর) এবং শ্রীকৃষ্ণ বাসুদেব বা ঈশ্বর নন। তিনি কৃষ্ণকে নির্দেশ দেন যে- শ্রীকৃষ্ণ যেন বাসুদেব পরিচয় এবং তাঁর ব্যবহৃত অস্ত্র-শস্ত্র ত্যাগ করেন এবং এগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে, শ্রীকৃষ্ণ, পৌন্ড্রককে দ্বন্দযুদ্ধের জন্য আহ্বান করেন এবং যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে হত্যা করেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

শ্রীমদ্ভাগবতের দশম স্কন্দের ৬৬ তম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে, যখন পৌন্ড্রক দ্বারকায় একটি বার্তা পাঠান যে- তিনি ঈশ্বর, তখন কৃষ্ণ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। পৌন্ড্রকের রথ কৃষ্ণের মতই তৈরি করা হয়েছিল, এমনকি গরুড়ধ্বজ পতাকাও একইরকম ছিল। শ্রীকৃষ্ণ, তাকে বাসুদেব-সাজার ছলনা এবং মিথ্যা দাবী ত্যাগ করার জন্য পুনপুন সতর্ক করেন। পরবর্তীতে, শ্রীকৃষ্ণ সুদর্শন চক্র দিয়ে পৌন্ড্রকের মাথা কেটে ফেলে পৌন্ড্রককে হত্যা করেন। কাশীর রাজপুত্র, সুদক্ষিণ, কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত পুরোহিতের সহায়তায় দ্বারকানগরী ধ্বংস করার জন্য কালো জাদু ব্যবহার করে একটি রাক্ষস তৈরি করেছিলেন। যাইহোক, শ্রীকৃষ্ণের সুদর্শন চক্র কাশীর চারপাশে আগুন লাগিয়ে দেয়। সমগ্র রাজ্য পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং সুদক্ষিণ ও তার সমস্ত পুরোহিতকে হত্যা করা হয়।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Vijaya-dhvaja's Bhagavata Purana, Chapter 69
  2. Bhagavata Purana Skandha X Chapter 66, Motilal Bansaridass Publishers Book 4 Appendix (66A) pages 1884- 1885, additional verses in Vijaya-dhvaja's Bhagavata Purana, Chapter 69
  3. "Srimad Bhagavatam: Canto 10 Chapter 66-"bhagavata.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]