৭ খুন মাফ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
৭ খুন মাফ
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকবিশাল ভারদ্বাজ
প্রযোজকরনি স্ক্রুওয়ালা
বিশাল ভারদ্বাজ
চিত্রনাট্যকারম্যাথিউ রবিনস
বিশাল ভারদ্বাজ
উৎসরাস্কিন বন্ড কর্তৃক 
সুসানা'স সেভেন হাসবেন্ডস
শ্রেষ্ঠাংশেপ্রিয়াঙ্কা চোপড়া
ভিভান শাহ
জন আব্রাহাম
ইরফান খান
আলেকজান্ডার ডায়াচেঙ্কো
অন্নু কাপুর
নীল নিতিন মুকেশ
নাসিরুদ্দিন শাহ্
ঊষা উথুপ
বর্ণনাকারীভিভান শাহ
সুরকারবিশাল ভারদ্বাজ
চিত্রগ্রাহকরঞ্জন পালিত
সম্পাদকএ. শ্রীকর প্রসাদ
প্রযোজনা
কোম্পানি
ভিবি পিকচার্স
পরিবেশকইউটিভি স্পটবয়
মুক্তি
  • ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (2011-02-18)
স্থিতিকাল১৪৭ মিনিট[১]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয় ১৫ কোটি (US$ ১.৮৩ মিলিয়ন)[২]
আয় ৩৩ কোটি (US$ ৪.০৩ মিলিয়ন)[৩]

৭ খুন মাফ (অনু.৭ হত্যা ক্ষমা), আন্তর্জাতিকভাবে সেভেন সিনস ফরগিভেন নামে মুক্তি পেয়েছিল, এটি একটি ২০১১ সালের ভারতীয় নব্য-নোয়ার ব্ল্যাক কমেডি নাট্য চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা, সহ-রচনা এবং সহ-প্রযোজনা করেছিলেন বিশাল ভারদ্বাজ। এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এছাড়াও সহ ভূমিকায় ছিলেন ভিভান শাহ, ইরফান খান, অন্নু কাপুর, নীল নিতিন মুকেশ, জন আব্রাহাম, আলেকজান্ডার ডায়াচেঙ্কো, নাসিরুদ্দিন শাহ্ এবং ঊষা উথুপ। ছবিতে একজন কুহকিনী নারী সুসানা আন্না-মেরি জোহানেসের গল্প বলা হয়েছে, সে একজন ইঙ্গ-ভারতীয় মহিলা, যে প্রেমের অনন্তকালীন অনুসন্ধানে সাতটি মৃত্যুর কারণ হয়েছিল।

৭ খুন মাফ রাস্কিন বন্ড রচিত সুসানা'স সেভেন হাসবেন্ডস ছোটগল্পের রূপান্তর। ছোটগল্পে একটি চিত্রনাট্যের সম্ভাবনা দেখার পর ভরদ্বাজ বন্ডকে অনুরোধ করেছিলেন গল্পটিকে চলচ্চিত্রের জন্য অভিযোজিত করার। বন্ড তাঁর চার পৃষ্ঠার ছোট গল্পটি একটি ৮০-পৃষ্ঠার উপন্যাসে প্রসারিত করেছিলেন, এবং পরে ভরদ্বাজ ম্যাথিউ রবিনসের সাথে চিত্রনাট্য সহ-রচনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রের সঙ্গীতও করেছিলেন ভারদ্বাজ এবং গানের কথা লিখেছিলেন গুলজারমূল চিত্রগ্রহণ কাশ্মীর থেকে শুরু হয়েছিল, এর পর কুর্গে ব্যাপক চিত্রগ্রহণ করা হয়েছিল।

ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১১ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি, এটি সর্বজনীন প্রশংসামূলক সমালোচনা পেয়েছিল, চোপড়ার অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।[৪][৫] সর্বজনীন প্রশংসামূলক সমালোচনা সত্ত্বেও, ৭ খুন মাফ বক্স-অফিসে ভাল প্রদর্শন করতে পারেনি। তবে এর নির্মাতাদের মতে, এটি মোট আয় করেছিল  ৩৩ কোটি (US$ ৪.০৩ মিলিয়ন), এর মধ্যে ছিল এর বক্স-অফিস আয় এবং টেলিভিশন-সঙ্গীত-হোম-ভিডিও অধিকারের আয়। এর নির্মাণ ব্যায় ছিল  ১৫ কোটি (US$ ১.৮৩ মিলিয়ন)। এটির প্রথম অভিনয় হয়েছিল ৬১তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, এটি ভারতজুড়ে বেশ কয়েকটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রশংসা পেয়েছিল। ৫৭তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার আয়োজনে ৭ খুন মাফ চারটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিল, দুটি জিতেছিল: চোপড়ার জন্য সেরা অভিনেত্রী- সমালোচক পুরস্কার এবং উথুপ এবং রেখা ভারদ্বাজের গান "ডার্লিং" এর জন্য শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী পুরস্কার

ঘটনা[সম্পাদনা]

সূচনা—[সম্পাদনা]

৭ খুন মাফ একজন অ্যাংলো-ভারতীয় মহিলা সুসানা আন্না-মেরি জোহানেসের (প্রিয়াঙ্কা চোপড়া) গল্প, যে তার সমস্ত স্বামীকে হত্যা করেছিল। সুসানা ভালবাসা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু সাত বারের মধ্যে ছয়বারই স্বামীদের ত্রুটিগুলি মারাত্মক প্রমাণিত হয়। কাহিনীটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অরুণ (ভিভান শাহ), তার স্ত্রী নন্দিনী কে(কঙ্কনা সেন শর্মা) শোনাচ্ছে। অরুণ ছোটবেলা থেকেই সুসানাকে চিনত, ধনী সুসানা তার অনেক উপকার করেছিল, এবং গোপনে অরুণ তার উপর আকৃষ্ট ছিল।

আর্মি মেজর[সম্পাদনা]

সুসানার প্রথম স্বামী এডউইন রড়রিক্স (নীল নিতিন মুকেশ), একজন আর্মি মেজর, সে ছিল ঈর্ষাপরায়ণ এবং অধিকারপ্রবণ। সে নিজে প্রতিবন্ধী ছিল এবং সন্দেহ করত যে যে সুসানা বিশ্বস্ত থাকবেনা। তাই সে সুসানার ওপর রাগ দেখাত। যদিও সুসানা এডউইনের নিষ্ঠুরতা সহ্য করত, কিন্তু তার বিশ্বস্ত, মূক সহিসকে (শশী মালব্য) চাবুক মেরে অন্ধ করে দেওয়া সে ক্ষমা করতে পারেনি। প্যান্থার শিকার ভ্রমণের সময় তার বিশ্বস্ত পরিচারিকা (ঊষা উথুপ), খানসামা (হরিশ খান্না) এবং সহিসের সহায়তায় এডউইনকে হত্যা করা হয়েছিল।

গায়ক জিমি[সম্পাদনা]

সুসানার দ্বিতীয় স্বামী জামশেদ সিং রাঠোড় (জন আব্রাহাম), যে তাদের বিয়ের পরে নিজের নাম রেখেছিল জিমি স্টেটসন, এমন এক গায়ক যার খুঁত হল তার গর্ব। জিমি সফল হয়ে ওঠে এবং নিজের খ্যাতি অপব্যবহার ক'রে গান চুরি করে, অন্যান্য মহিলা বিহার শুরু করে এবং ড্রাগের নেশায় পড়ে। সুসানা তার আসক্তি থেকে তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে, কিন্তু যখন সে গোপনে নেশা চালাতে থাকে, তখন তাকে হেরোইনের অতিরিক্ত মাত্রা দিয়ে শেষ করা হয়। পুলিশ তদন্তকারীরা তার মৃতদেহের কাছে ছয়টি আঙ্গুলযুক্ত পদচিহ্ন দেখতে পেয়ে ইঙ্গিত দেয় যে এমন একটি ব্যক্তি (তার বিশ্বস্ত চাকরদের মধ্যে একজন) হত্যাকারী। কিন্তু সুসানা তার সৌন্দর্য ব্যবহার করে সন্দেহ অপসারিত করে।

কবি ওয়াসিউল্লাহ[সম্পাদনা]

সুসানার তৃতীয় স্বামী ওয়াসিউল্লাহ খান (মুসাফির নামেও পরিচিত) (ইরফান খান) দিনের বেলা একজন নম্র, চিন্তাবিদ কবি কিন্তু রাতের বেলা সে অত্যাচারী ধর্ষকামী, প্রচণ্ড ক্রোধের প্রতিলিপি। সুসানা চেষ্টা করে তার আঘাতগুলি ঢেকে রাখতে; কিন্তু তার চাকররা তার সাথে খারাপ আচরণ দেখে সহ্য করতে পারে না। খানকে শেষ পর্যন্ত কাশ্মীরে বরফের কবরে প্রোথিত করা হয়।

গুপ্তচর নিক[সম্পাদনা]

তার চতুর্থ স্বামী নিকোলাই ভ্রনস্কি (আলেকজান্ডার ডায়াচেঙ্কো), একজন রাশিয়ান গুপ্তচর যে দ্বৈত জীবনযাপন করে। সে সুসানার সৌন্দর্যে মোহিত হয়। সুসানা যখন জানতে পারে যে তার আর এক স্ত্রী এবং পরিবার রাশিয়ায় আছে, নিকের জীবন শেষ হয় সুসানার পোষ্য সাপের কুয়োতে পড়ে।

ইন্সপেক্টর কিমত[সম্পাদনা]

তার পঞ্চম স্বামী কিমত লাল (অন্নু কাপুর) একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর। সে যৌন অনুগ্রহের বিনিময়ে সুসানাকে মামলা থেকে রক্ষা করেছিল। ভায়াগ্রার উপর তার নির্ভরতা তাকে কর্মক্ষমতায় অপারগ করে; দুর্ভাগ্যজনক এক রাতে, সুসানা লালের পানীয়তে ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা মিশিয়ে দেয়। এই সময়, অরুণ ডাক্তার হয়ে রাশিয়া থেকে ফেরে। সুসানা তাকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অরুণ তাকে ছেড়ে যায়।

ডাক্তার মধু[সম্পাদনা]

মধুসূদন তরফদার (নাসিরুদ্দিন শাহ্) একজন বাঙালি চিকিৎসক যে সুসানাকে আত্মহত্যার চেষ্টা থেকে উদ্ধার করেছিল এবং তার জন্য শুধুমাত্র মাশরুম আহার বরাদ্দ করেছিল। যদিও সুসানা তাকে বিবাহ করতে চায় নি, কিন্তু সে সুসানাকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজী করায় যে সুসানাই তার সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী হবে। কিন্তু বাস্তবে সে ছিল দেউলিয়া, সে সুসানার সম্পত্তির লোভে তাকে বিষ খাওয়াবার চেষ্টা করে। পরিবর্তে যখন তার খানসামা মারা যায়, সুসানা রাশিয়ান রুলেট খেলার সময় তরফদারকে গুলি করে মারে। তারপরে সে আবার আত্মহত্যার প্রয়াসে বাড়িটি জ্বলিয়ে দেয়। সুসানাকে উদ্ধারের প্রয়াসে তার পরিচারিকা মারা যায়।

উপসংহার - সপ্তম স্বামী[সম্পাদনা]

ফরেনসিক পরীক্ষাগারে অরুণ আবিষ্কার করে যে মৃতদেহটি সুসানার নয়। কিন্তু তাকে শিক্ষিত করার পেছনে সুসানার যে অবদান ছিল তার মূল্য হিসাবে সে সুসানাকে মৃত ঘোষণা করে। সে সুসানার সন্ধানে পন্ডিচেরিতে যায়। সেখানে সে দেখে সুসানা একজন নান হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রেম এবং করুণার প্রতিনিধিত্বকারী যীশু খ্রীষ্টকে সে তার তার সপ্তম স্বামী হিসাবে মেনে নিয়েছে।

চরিত্র চিত্রণ[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "2 Khoon Maaf"British Board of Film Classification। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৩ 
  2. "7 Khoon Maaf dies a slow death"The Times of India। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ২৯ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৩ 
  3. "All India 2011"। Box Office India। ৪ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৩ 
  4. "Bollywood rediscovered mega hits in 2011"। CNN-IBN। ১৬ ডিসেম্বর ২০১১। ২৬ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৩ 
  5. Tuteja, Joginder (২৩ জুন ২০১২)। "Exploring the box office journey of Priyanka Chopra - Part 3"। Bollywood Hungama। ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:ইউটিভি মুভিজ